অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান ওরফে পিচ্চি হেলাল এবং সানজিদুল ইসলাম ইমনদের মত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক।
এসময় গত কয়েক মাসে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে দাবি করে তিনি জানান, রাজধানীতে ছিনতাই প্রতিরোধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ টিম।
শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কোথায়? তাদের কি অবস্থান আপনার নিশ্চিত নন? জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন: আমরা এখনো তাদের অবস্থান প্রেস করতে পারিনি। তবে আমাদের শতভাগ চেষ্টা চলছে। পেলেই গ্রেপ্তার করবো। আমরা সক্রিয় আছি।
আজকের ব্রিফিংয়ের ৫টি ঘটনার ৪ টিই ছিনতাই সংক্রান্ত। তাহলে কি এটাই প্রমাণ করে যে, পুলিশের যে নিরাপত্তা বলয় তা বিঘ্নিত হচ্ছে? নগরবাসীর নিরাপত্তা দিতে কি পুলিশ ব্যর্থ? জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন: ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও স্বাভাবিক রাখা নিয়ে কাজ করছি। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যা যা করা দরকার পুলিশ তা করছে। ছিনতাইকারীরা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করছে। তাদের যে ছিনতাই প্রচেষ্টা তা রোধ ও গ্রেপ্তারে ডিবির সবগুলো ইউনিটসহ স্পেশাল টিমগুলো কাজ করছে। আশা করছি খুব শিগগিরই সুফল পাবে নগরবাসী।
ডিবি প্রধান বলেন, গত ২৭ নভেম্বর রাজধানীর কোতয়ালী থানাধীন কোর্ট বিল্ডিং এর সামনে থেকে এক কেজি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৯২৮ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।
গ্রেপ্তাররা হলেন বিধান চন্দ্র বিশ্বাস, সবুজ হাওলাদার, আল আমিন খান, তরিকুল ইসলাম, শফিকুল রহমান চুন্নু ও আজিম উদ্দিন। সেসময় তাদের হেফাজত হতে ছিনতাই হওয়া ৯২৮ গ্রাম স্বর্ণ, বিভিন্ন মডেলের চারটি মোবাইল ফোন ও তিনটি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৯ ও ৩০ জানুয়ারি) পটুয়াখালী জেলার বাউফল ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৯ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতা বিধান বিশ্বাসকে লুণ্ঠিত ৫৮০ গ্রাম স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার করা হয়। বিধান বিশ্বাসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সবুজ সরকার, তরিকুল ইসলাম ও আজিম নামক অপর তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ৩৪৮ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, কালিপদ নামের এক ব্যক্তি স্বর্ণ সরবরাহ করার সংবাদটি মূল ছিনতাইকারী চক্রের কাছে দেয়। পরে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যগণ ঘটনাস্থলে একত্রিত হয়ে রাজীব দাসকে আঘাত করে তার কাছে থাকা স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
গত ২৭ নভেম্বর কোতয়ালী থানাধীন তাঁতি বাজারের জনৈক স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদেশ বাবুর স্বর্ণের দোকান থেকে তার কর্মচারি রাজীব দাস বিক্রিত এক কেজি স্বর্ণ সরবরাহ করার জন্য রওনা দেয়। রাজিব দাস রাত ০৯:৩০ ঘটিকায় দায়রা আদালত ভবনের সামনে পৌঁছলে এক দল দুষ্কৃতকারী তার পথ রোধ করে তার কাছে থাকা স্বর্ণ ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সে সময় ছিনতাইকারীদের আঘাতে রাজীব দাস আহত হয়। এ ঘটনায় পরদিন ২৮ নভেম্বর রাজীব দাস বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে সাতটি মামলার আসামি দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী মো. শামীম হোসেনকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। সেসময় তার কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি অত্যাধুনিক সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টায় রামপুরা রেলক্রসিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শামীম উত্তরা ও গাজীপুর এলাকার চুরি ও ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে গাজীপুর মহানগর পুলিশের টঙ্গী পূর্ব থানায় ছিনতাই ও ডাকাতি প্রস্তুতির ঘটনায় সাতটি মামলা রয়েছে।
Leave a Reply